ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

খুলে যাবে উপকূলীয় চার উপজেলার সম্ভাবনার দূয়ার

একতাবাজার-মগনামা-বানৌজা শেখ হাসিনা সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ ২০২২ সালে সম্পন্ন হবে

ছোটন কান্তি নাথ, চকরিয়া ::  দেশের একমাত্র কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামায় প্রথমবারের মতো নির্মিতব্য শেখ হাসিনা বানৌজা সাবমেরিন ঘাঁটিতে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে বর্তমান বিদ্যমান চকরিয়ার বরইতলী একতাবাজার থেকে মগনামা পর্যন্ত দীর্ঘ ২৩ কিলোমিটার সড়ককে ১০ দশমিক ৩ পয়েন্টে উন্নীত করা হবে। তিন প্যাকেজে এই সড়কটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হবে আগামী ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে। সড়কটির বর্তমান প্রস্থ ৫ দশমিক ৫ পয়েন্ট থেকে ১০ দশমিক ৩ পয়েন্ট উন্নীতের কাজ শেষ হলে আমূল পরিবর্তন সাধিত হবে আশপাশের উপকূলীয় চারটি উপজেলার। সড়কটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করবেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘একতা বাজার হতে বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি’ সংযোগ সড়ক। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬১ কোটি টাকা।

গত রবিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সড়কটির নির্মাণকাজের ভিস্তিপ্রস্তর স্থাপন ও কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ হতে সরবরাহকৃত তথ্য থেকে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক থেকে পশ্চিমে চলমান একতা বাজার-পহরচাঁদা-মগনামাঘাঁট-বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি জেলা মহাসড়কটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। সড়কটির দৈর্ঘ্য ২৩ কিলোমিটার এবং বিদ্যমান প্রস্থ ৫ দশমিক ৫ মিটার যা ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থে উন্নীত করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ১ কিলোমিটার হতে ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কাংশ প্রশস্থকরণ, ৬ কিলোমিটার হতে ১২ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কাংশের পেভমেন্ট উঁচুকরণ, প্রশস্থতকরণ ও শক্তিশালীকরণ। আবার ২০ কিলোমিটার থেকে ২৩ কিলোমিটার পর্যন্ত নতুন করে সড়ক নির্মাণ করা হবে। নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত সড়কাংশ সাবমেরিন ঘাঁটি ‘বানৌজা শেখ হাসিনাতে’ যাতায়াতের জন্য একমাত্র সড়ক এবং যা বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত বেড়িবাঁধ।

সরবরাহকৃত তথ্যে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, সড়কটি দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার জনসাধারণের যাতায়াতের এবং চকরিয়া, পেকুয়া ও কুতুবদিয়ায় উৎপাদিত লবণ এবং আহরিত চিংড়ি ও সামুদ্রিক সম্পদ দেশের অন্যান্য স্থানে পরিবহনের জন্য একমাত্র এই সড়ক ব্যবহার হবে। এছাড়া মগনামা ঘাঁট হতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে ৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটিতে যাতায়াত একেবারে সহজ হবে। এতে উপকৃত হবেন উপকূলীয় এলাকার অন্তত ১০ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠি।

প্রকল্পের প্রধান অঙ্গসমূহ হলো- ২ দশমিক ৮৩ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। সড়ক বাঁধে মাটির কাজ করা হবে ৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭৮ দশমিক ৬৮ ঘনমিটার। ৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার নির্মাণ করা হবে নতুন পেভমেন্ট। প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন পায় ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির অনুমোদন পায় চলতি বছরের গত ৫ নভেম্বর। নির্মাণকাজ শেষ হবে আগামী ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিদ্যমান পুরোনো সড়কটিই প্রশস্তকরণ করা হচ্ছে। দুই লেনের বাইরেও এই সড়কের বিভিন্ন অংশে নির্মাণ করা হবে ছোট ছোট সার্ভিস লেনও। যাতে লোকাল গাড়িগুলোও ওয়ানওয়ে চলতে পারে। পানি চলাচলের জন্যও সড়কটিতে থাকবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা।’

এ ব্যাপারে কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘৩৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হতে যাওয়া এই সড়কটিই হয়ে উঠবে চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর মানুষের অর্থনীতির চাকা সচলের। একইসাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নামে মগনামায় দেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি তথা ‘বানৌজা শেখ হাসিনা সাবমেরিন ঘাঁটিতে’ যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত হবে এই সড়কটি। এটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে সম্ভাবনার দূয়ার অবারিত হবে এখানকার মানুষের।’

 

 

পাঠকের মতামত: